বর্ষাকালে বাংলাদেশে প্রকৃতি হয়ে ওঠে মনোরম ও মনোমুগ্ধকর। এই সময় ভ্রমণ করলে পানিতে ভেজা বন, নীল জলরাশি, পাহাড়ি ঝর্ণা ও সবুজের অপরূপ দৃশ্য উপভোগ করা যায়। বর্ষাকালে ভ্রমণ উপযোগী দেশের ১০টি জনপ্রিয় জায়গা হলো—
১. রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট, সিলেট
সিলেট থেকে ২৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই জলাবন বনে ৭০টির বেশি গাছ ও প্রাণী দেখা যায়। বর্ষার সময়ে গোয়াইন নদীর পানি বনের মধ্যে ঢুকে বনকে জুড়ি মেলা সৌন্দর্যে ভরিয়ে তোলে। নৌকা ভাড়া করে নদী পার হওয়া পর্যটকদের জন্য এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা।
২. টাঙ্গুয়ার হাওর, সুনামগঞ্জ
বর্ষার রাতে পূর্ণিমার আলোয় হাওরের নৌকায় কাটানো মুহূর্ত অমুল্য। জলের গুঞ্জনের মাঝে প্রকৃতির সঙ্গে একাত্ম হওয়ার সুযোগ মেলে। সুনামগঞ্জ থেকে তাহিরপুর নৌকা ঘাটে অনেক নৌকা ভাড়া পাওয়া যায়।
৩. বিছানাকান্দি, সিলেট
সিলেটের পাহাড়, জলপ্রপাত ও নদীর মিলন এই জায়গাকে অনন্য করেছে। বর্ষায় পানিতে ভরা ঝর্ণা ও হ্রদ পর্যটকদের মুগ্ধ করে। নৌকা ভাড়া করে বিছানাকান্দি ও পান্থুমাই একসঙ্গে দেখা হয়।
৪. সুন্দরবন, খুলনা
বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন ও ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট। সবুজের অনন্য প্রাচুর্য, ছোট দ্বীপ এবং সূর্যাস্তের দৃশ্য প্রকৃতিপ্রেমীদের মোহিত করে। খুলনা থেকে নৌকায় সুন্দরবনে পৌঁছানো যায়।
৫. জাফলং, সিলেট
ভারতের ডাওকি নদী পাহাড় থেকে প্রবাহিত হয়ে জাফলং এ প্রবেশ করেছে। বর্ষায় নদীর পানি প্রাণবন্ত হয় এবং ঝর্ণার দৃশ্য অতুলনীয়। ঢাকা থেকে সিলেট পৌঁছে দুই ঘন্টায় জাফলং যাওয়া যায়।
৬. কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত, পটুয়াখালী
১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ সৈকত, যেখানে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দুইই দেখা যায়। সমুদ্রের সঙ্গে শুটকি পল্লী, লাল কাঁকড়ার দ্বীপ ও ঐতিহাসিক কুয়া দর্শনার্থীদের আকর্ষণ করে। পদ্মা সেতুর কারণে ঢাকা থেকে মাত্র ৫ ঘণ্টায় পৌঁছানো সম্ভব।
৭. কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত
১২০ কিলোমিটার দীর্ঘ বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত। বর্ষাকালে নীল জলরাশি ও মেঘাচ্ছন্ন আকাশ মুগ্ধতা সৃষ্টি করে। সাঁতার, সার্ফিং এবং সৈকত ভ্রমণে উপযুক্ত। ঢাকা থেকে আকাশপথে মাত্র এক ঘণ্টা লাগবে।
৮. শ্রীমঙ্গল চা-বাগান, মৌলভীবাজার
বাংলাদেশের চায়ের রাজধানী। সাতগাঁও চা-বাগান, জেরিন টি-এস্টেট ও নূরজাহান টি-এস্টেট দর্শনীয়। কমলগঞ্জ থেকে মাধবপুর লেক পর্যন্ত চা-বাগানের দৃশ্য অতুলনীয়।
৯. ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর, সিলেট
৩৩ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত, মেঘ, পাহাড়ী ঝরনা ও বালুকাময় ধোলাইয়ের সঙ্গে মিলিয়ে বর্ষার দৃশ্য মনোমুগ্ধকর। সড়কপথে সিলেট থেকে ৩৫ কিলোমিটারে পৌঁছানো যায়।
১০. নীলাচল, বান্দরবান
উচ্চ পাহাড়ে অবস্থিত এই পর্যটন কেন্দ্রটি বর্ষায় প্রকৃতির মায়ায় ভরা। নীলাচলের বন, আকাশ ও দূর সৈকতের দৃশ্য এক অপূর্ব অভিজ্ঞতা দেয়। বান্দরবান থেকে নীলাচলে সিএনজি বা গ্রুপ গাড়িতে পৌঁছানো যায়।