বিবাহের মাধ্যমে নতুন একটি পরিবার গঠন হয়। একজন পুরুষ ও একজন নারী মিলিত হয়ে পরিবার তৈরি করেন। যুগে যুগে বিবাহের মাধ্যমে মানুষ ছড়িয়ে পড়ে এবং মানবজাতির বংশ বিস্তার ঘটে।
ইসলাম অনুযায়ী, বিবাহ শুধু সামাজিক অনুষ্ঠান নয়, এটি আল্লাহর নৈকট্য লাভের একটি মাধ্যম। হযরত আদম (আ.) ও হযরত হাওয়া (আ.) এর বিবাহের মাধ্যমে মানবসভ্যতার সূচনা হয়েছিল। কুরআনে আল্লাহ বলেন:
“তোমাদের মধ্যে যারা সঙ্গীহীন, তাদের বিয়ে করো এবং তোমাদের দাস-দাসীদের মধ্যে যারা সৎ তাদেরও। যদি তারা অভাবগ্রস্ত হয়, আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদের অভাবমুক্ত করে দেবেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ।”
— সূরা নূর, আয়াত ৩২
বিবাহের আরবি শব্দ হলো নিকাহ, যার অর্থ “একত্রিত হওয়া”। ইসলামী শরীয়াহ অনুযায়ী, নিকাহ হল একজন নারী ও একজন পুরুষের মধ্যে বৈধ সামাজিক ও আইনি বন্ধন। হযরত মুহাম্মদ (স.) এর আদর্শে বিবাহ একটি সুন্নাহ।
কুরআনে আরো বলা হয়েছে:
“হে মানুষ, তোমরা তোমাদের রবকে ভয় কর, যিনি তোমাদের এক উৎস থেকে সৃষ্টি করেছেন, আর তা থেকে তোমাদের স্ত্রীদের সৃষ্টি করেছেন।”
— সূরা নিসা, আয়াত ১
বিবাহ সামাজিক জীবনের প্রথম কাঠামো। পরিবার বলতে আমরা মা-বাবা, ভাই-বোন ও আত্মীয়স্বজনকে বোঝাই। দাম্পত্য জীবন শুরু হওয়ার পর প্রথমে আনন্দ ও উল্লাস থাকে, কিন্তু অনেকে কুরআন ও সুন্নাহ অনুসারে জীবন পরিচালনা না করলে সম্পর্কের মধ্যে দ্বন্ধ সৃষ্টি হয়, যা তালাক বা বিচ্ছেদের কারণ হয়।
বিচ্ছেদ বা বিবাহবিচ্ছেদের সাধারণ কারণ
শাশুড়ি বা শ্বশুর কর্তৃক অত্যাচার ও সমালোচনা
স্বামীর মদ, জুয়া, যৌতুক বা অন্য অপরাধে আক্রান্ত জীবন
স্বামী বা স্ত্রীর পরকীয়া সম্পর্ক
পারিবারিক ও সামাজিক দায়িত্বে অবহেলা
কিন্তু কুরআনের নির্দেশ অনুযায়ী, স্বামী-স্ত্রী যদি আল্লাহকে ভয় করে এবং কুরআন ও হাদীস অনুযায়ী জীবনযাপন করে, তাহলে দাম্পত্য জীবনে বিচ্ছেদ বা তালাকের প্রয়োজন হয় না।
“তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের মধ্য থেকে স্ত্রী সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের কাছে শান্তি পাও এবং পারস্পরিক ভালোবাসা ও দয়া সৃষ্টি হয়েছে।”
— সূরা রূম, আয়াত ২১
দাম্পত্য সম্পর্কের গভীরতা আল্লাহ এমনভাবে নির্দেশ করেছেন:
“তারা তোমাদের জন্য পোশাক, আর তুমি তাদের জন্য পোশাক।”
— সূরা বাকারা, আয়াত ১৮৭
সুতরাং মুমিনের উচিত দাম্পত্য জীবনকে সতর্ক ও যত্নসহকারে পরিচালনা করা, যাতে সুখ, শান্তি ও ভালোবাসা বজায় থাকে।