চাঁদপুরের মেঘনায় একটি জাহাজে সাতজনের হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উদঘাটন করেছে র্যাব। গত সপ্তাহে বাগেরহাট থেকে গ্রেপ্তার করা হয় আকাশ মণ্ডল (ইরফান) নামের এক ব্যক্তি, যাকে হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনাকারী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস জানিয়েছেন, গ্রেপ্তারি পরবর্তী জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার পেছনের ঘটনা বিস্তারিত জানা যায়।
প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, আকাশ মণ্ডল দীর্ঘদিন ধরে জাহাজের মাস্টার গোলাম কিবরিয়া এবং অন্য কর্মীদের বেতন না দেয়ার কারণে ক্ষুব্ধ ছিলেন। এছাড়া, মাস্টার গোলাম কিবরিয়ার দুর্ব্যবহারের কারণে ক্ষোভে অনুপ্রাণিত হয়ে আকাশ মণ্ডল হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করেন।
র্যাবের তথ্যমতে, আকাশ মণ্ডল পাবনার একটি বাজার থেকে ঘুমের ওষুধ কিনে জাহাজের খাবারে মিশিয়ে দেন। পরবর্তীতে, রাতে সবাই খাবার খেয়ে অচেতন হয়ে পড়লে, গ্লাভস পরে চাইনিজ কুড়াল দিয়ে একে একে সবাইকে হত্যা করেন তিনি। কুড়ালটি আগেই জাহাজে রাখা ছিল, যা সাধারণত নিরাপত্তা ব্যবস্থার অংশ হিসেবে রাখা হয়েছিল।
এছাড়া, হত্যাকাণ্ডের পর, আকাশ মণ্ডল জাহাজের মাঝ নদীতে নোঙ্গর করা অবস্থায় সবার মৃত্যু নিশ্চিত করে ট্রলার চালিয়ে হাইমচর এলাকায় পৌঁছান এবং সেখান থেকে পালিয়ে যান। হত্যাকাণ্ডের দিন, গোলাম কিবরিয়াকে প্রথমে হত্যা করা হয়েছিল, কিন্তু তখন অন্যরা ঘটনাটি দেখে ফেললে, আকাশ মণ্ডল সিদ্ধান্ত নেন পুরো জাহাজের কর্মীদের হত্যা করার।
র্যাবের ভাষ্য অনুযায়ী, এই হত্যাকাণ্ডটি একাধিক কারণের সম্মিলন ছিল, যার মধ্যে অন্যতম ছিল বেতন না দেওয়া, দুর্ব্যবহার এবং দীর্ঘদিন ধরে জমে থাকা ক্ষোভ।